চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাত ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ একাধিক যুদ্ধবিমান হারিয়েছে ভারত—এ তথ্য অবশেষে স্বীকার করেছেন দেশটির চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান।
শনিবার (৩১ মে) সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ‘শ্যাংরি-লা ডায়ালগ’ অনুষ্ঠানে ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “সংখ্যা নয়, মূল বিষয় হলো কেন সেই বিমানগুলো ভূপাতিত হলো, কোথায় আমাদের কৌশলগত ভুল ছিল, এবং কীভাবে তা সংশোধন করে আমরা অভিযানে এগিয়ে গেছি।”
তিনি জানান, পাকিস্তানের সঙ্গে মে মাসের সংঘর্ষে ভারতের বেশ কিছু যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও সুনির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ করেননি।
এর আগে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দাবি করেছিলেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী অন্তত ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। নয়াদিল্লি এতদিন এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও, এবার আংশিক স্বীকৃতি এল ভারতীয় সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে।
২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর থেকেই দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। ভারত সরাসরি এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে।
পরবর্তী চারদিন ব্যাপী সীমান্তজুড়ে তীব্র সংঘাতে দুই দেশ বিমান, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও ভারী গোলাবর্ষণে লিপ্ত হয়। সামরিক বিশ্লেষকরা একে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে গত পাঁচ দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ মুখোমুখি সংঘাত হিসেবে দেখছেন।
পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নে জেনারেল চৌহান বলেন, “প্রচলিত যুদ্ধ আর পারমাণবিক সীমার মধ্যে এখনও বিস্তর ফাঁক রয়েছে। আমাদের যোগাযোগ চ্যানেল খোলা ছিল এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানা কৌশল নেওয়া হয়।”
পাশাপাশি, পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে যেসব সামরিক সহায়তা পেয়েছে, তা কার্যকর হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। বরং ভারত ৩০০ কিলোমিটার ভেতরে থাকা পাকিস্তানি বিমান ঘাঁটিতেও সফলভাবে হামলা চালিয়েছে বলে জানান চৌহান।
বর্তমানে দুই দেশই আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার প্রচারে ব্যস্ত রয়েছে। যুদ্ধবিরতি এখনও কার্যকর রয়েছে বলে জানিয়ে চৌহান সতর্ক করেন, “সবকিছু নির্ভর করছে পাকিস্তানের আচরণের ওপর। আমরা আমাদের ‘রেড লাইন’ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি।”